Monthly Archives: January 2018

মনের অস্থিরতা

আমার পরিচিত একজন আমাকে বেশ কিছুদিন আগে জিজ্ঞেস করেছে – তুমি সবচেয়ে কি জিনিস বেশি ভয় পাও? সে নিজে অনেক ছোট খাটো প্রাণী ও ভূত প্রেতকে ভয় পায় বলেছে। তার প্রশ্নটা শুনে আমি কিছুক্ষন ভাবলাম। বুঝলাম সে যে বিষয়গুলোর কথা বললো সেগুলোকে আমি তেমন ভয় পাই না। আরেকটি বিষয় আমার পরিষ্কার হলো যে এসমস্ত প্রাণী বা ভূত প্রেতের কারণে কখনও মৃত্যু হবে বলে আমার ভয় হয় না। মৃত্যু বিষয়টিও আমার কাছে তেমন ভয়ের কারণ মনে হয় না। তবে একথা সত্যি যে কোনো সাপ দেখলে আমার খুব অস্বস্তি লাগে। একধরণের ফোবিয়া ও হতে পারে। এটাকেও একধরণের ভয় বলা যায়। কিন্তু, ওই প্রশ্ন করার কিছুদিন পর আমার লেখা পুরোনো কয়েকটি লাইন আমার মনে পরে গেলো। আমি লিখেছিলাম –

পৃথিবীতে যত ভীতিময় আছে,
আছে যত সংশয়,
সবার চাইতে নিজেকেই আজি
লাগিতেছে বড়ো ভয়।

ঠিক তাই। আমার কাছে একটা বিষয় ধীরে ধীরে পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে যে আমি আমাকেই সবচেয়ে বেশি ভয় করি। এ কথাটা হয়তো কিছুটা উদ্ভট মনে হতে পারে। কিন্তু আসলে সত্যিই আমার মনে হয় আমি আমার যতটুকু ক্ষতি করতে পারি অন্য কেঊ আমার সেরকম ক্ষতি করতে পারবে না। ঠিক কেমন সেটা ভাষায় প্রকাশ করতে একটু কষ্ট হচ্ছে। কোনো উপমাও মনে আসছে না। কিন্তু আমার মনে হয় নিজের সাথে নিজের যখন একান্ত সাক্ষাৎ হয় – যখন অন্তরের নিভৃত স্থানে ইচ্ছা আকাঙ্কাগুলো একে অপরের সাথে পাল্লা দেয় এবং কোনটি বেশি গুরুত্ত্বপূর্ণ সেটি নির্ণয় করাটাও দুঃসাধ্য হয়ে পরে – তখন ভয় হয়। যখন চারপাশের সব প্রলোভনগুলোকে দেখি এবং বুঝতে পারি চিত্ত অস্থির হয়ে পড়ছে, একটা ঘোরের মধ্যে থেকে সে কাজ করছে, আমার খুব ভয় হয়। নিজের সাথে মুখোমুখি হলে বিচলিত হয়ে যখন বিকল্প পথ খোঁজে, নিজেকে এড়িয়ে অন্য কোনোখানে সঙ্গ খোঁজে, তখনও ভয় হয় – নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছি বলে।